ব্যর্থতা কাঠিয়ে সফল হয়ে ওটার গল্প।


ব্যর্থতা কাঠিয়ে সফল হয়ে ওটার গল্প...


আমরা সবাই নিজের সেট করা কোন এক নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই। কিন্তু আমদের মধ্যে অনেকে জানিনা কোন রাস্তা দিয়ে যাব? যদি এমন হয় তাহলে উক্ত গন্তব্যে পৌছা আমাদের মধ্যে কারোর পক্ষে সম্ভব নয়। তদ্রুপ আমরা যদি সফলতা চাই কিন্তু আমরা জানিনা কোন উপায়ে সেটা পাওয়া যাবে তাহলে আমরা কখনও সফলতার দারপ্রান্তে যেতে পারবনা।

সঠিক ভাবে গন্তব্যে পৌছার জন্য যেরকম আমাদের জানতে হবে, কিভাবে কোন একজন লোক ঐ জায়গায় পৌছে ছিল?
ঠিক তদ্রুপ
সফলতা পাওয়ার জন্য আমাদের এটা জানতে হবে যে,কোন উপায়ে অন্য একজন লোক সফল হয়েছিল? চলুন তাহলে জেনে নেই একজন সফল মানুষের সফল হওয়ার পেছনের গল্প।
এই গল্প বলার জন্য আমি মালেক আজ আপনাদের সামনে হাজির হলাম

অনেকদিন আগের কথা । কোন এক সময় ছিলো যখন ইঞ্জিনচালিত গাড়ি ইংরেজি সর্বশেষ বর্ণ "Z" অক্ষরের মতো হ্যান্ডেল দিয়ে চালু করতে হতো। অনেক পরিশ্রম আর শক্তি ব্যয় করে এরকম ইঞ্জিন চালিত গাড়িগুলো চালু করতে হতো । অর্থাৎ সেই সময় যে কোনো গাড়ি চালু করা ছিল তুলনামূলক অনেক কষ্টকর একটা ব্যাপার ।

একজন তরুণ যুবক ছিলেন যিনি ‘জেনারেল মোটর্স রিসার্চ কর্পোরেশনের ‘ ভাইস প্রেসিডেন্ট । তিনি বন্ধুদের বললেন যে, একটা ছোট চাবি দিয়ে এরকম ইঞ্জিন চালিত গাড়িগুলো চালু করা যেতে পারে । কিন্তু বন্ধুরা হেসে তার কথাটি উড়িয়ে দিলেন । তারা সকলেই বলে উটলেন যে , এটি একটি অসম্ভব কল্পনা । আর তার খেয়ালি কল্পনার জন্য সবাই মজাও করতে শুরু করলেন । সবাই একত্রে বলে উটলো যে , “একটা ছোট চাবি দিয়ে এত বড় মোটর গাড়িকে স্টার্ট করা সম্ভব নয় ।” কিন্তু আজ আমরা সবাই জানি যে, এটাও সম্ভব হয়েছে । এখন একটা ছোট চাবি দিয়ে অর্থাৎ সেল্ফ স্টার্টারের মাধ্যমে গাড়ি স্টার্ট করা যায় ।

কীভাবে এটা সম্ভব হলো ?

এবার সে বিষয়ে বলা যাক।

তার নাম চার্লস ফ্রাঙ্কলিন ক্যাটারিং ( Charles Franklin Kettering) । সংক্ষেপে চার্লস এফ ক্যাটারিং নামেই পরিচিত আজ । যিনি এই অসাধ্য সাধন করতে পেরেছিলেন । তিনি যখন গাড়ির সেল্ফ স্টার্ট এর আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখতেন । তখন তার এই স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজন ছিল প্রচুর সময় এবং পরিশ্রম । বাধ্য হয়েই তিনি চাকরিটি ছেড়ে দেন । যে কোনো গবেষণার জন্য অর্থেরও প্রয়োজন । চাকরি না থাকায় তাঁর অর্থের অভাব দেখা দিল । তাঁর ব্যাংক ব্যালান্স ফুরোতে লাগলো । একটা সময় সবই ফুরিয়ে গেল । তখনও চার্লস ক্যাটারিং সফল হতে পারলেন না । একটার পর একটা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে লাগলো । গবেষণা চালিয়ে যাবার জন্য আরো পয়সার প্রয়োজন হতে লাগলো । হতাশ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেবেন , নাকি কাজ চালিয়ে যাবেন? তিনি জমি জমা গয়না ইত্যাদি বিক্রি করতে লাগলেন । একটা সময় সেসবও ফুরিয়ে গেল । শেষ সম্বল রইলো পৈতৃক সম্পত্তি চাষের খেত আর বসত বাড়িটি । পৈতৃক সম্পত্তি আর ফিরে পাওয়া যায় না , তাই তিনি বসত বাড়িটি বিক্রি করে দিলেন । আর ক্ষেতের এক ধারে কুঁড়ে ঘর বানিয়ে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বাস করতে লাগলেন ।

গভীর গবেষণায় তিনি এতই নিমগ্ন যে , আত্মীয় বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে লাগলেন । তার উপর বন্ধু , আত্মীয় সকলেই তার স্ত্রীকে বললেন যে, তিনি কেন এত পাগলামি মেনে নিচ্ছেন ? সন্তানদের ভবিষ্যৎ নেই ?

কিন্তু তাঁর স্ত্রী বললেন যে তারা তো কষ্ট করছেনই , কিন্তু ক্যাটারিং সাহেব নিজে যে এত পরিশ্রম করছেন নিজের শরীরের দিকে তাকানোর পর্যন্তও অবসর নেই -এটাই তাকে বেশি চিন্তায় রাখছে । অর্থাৎ তার স্ত্রী স্বামীর কাজকে, তার অধ্যবসায়কে সমর্থনই করছেন।

এত কিছু সত্ত্বেও চার্লস ক্যাটারিং কিন্তু বিশ্বাসে অটল ছিলেন যে , তিনি একদিন সফল হবেন । দীর্ঘ কয়েক বছর পর অবশেষে তাঁর স্বপ্ন সফল হলো । তিনি যেদিন সেল্ফ স্টার্টের প্রদর্শন করেন , সে দিন সকলেই অবাক । সমস্ত মোটর শিল্পের লোকেরা তার টেকনিক কিনে নিতে লাগলেন আর দেখতে দেখতে তিনি অনেক অর্থের মালিক হয়ে উঠলেন ।

বিশ্বের বিখ্যাত সব পত্র পত্রিকা তাঁকে ঘিরে ধরে তাঁর সাফল্যের কারণ জানতে চাইলো । ” অনেক অনেক বাধার পরেও নিজের লক্ষ্য পূরণ করেই ছাড়লেন , আপনার এতো ধৈর্যের উৎস কী ? ”

এর উত্তর দেওয়ার জন্য ক্যাটারিং সাংবাদিককে তাঁর সেই কুঁড়ে ঘরে নিয়ে গেলেন , আর ঘরের সমস্ত জিনিসের মাঝে থেকে একটা ছোট্ট পাথর বের করে দেখালেন আর বললেন , ” এটাই আমার সাফল্যের উৎস “।

দেখা গেল সেই পাথরে লেখা ছিল একটি ছোট্ট কথা “আজ” । তিনি বললেন ” এই ‘আজ’ই আমার সফলতার উৎস । কারণ গতকাল মানুষের জীবনে হতাশা এনে দেয় , আগামী কাল এনে দেয় অলসতা । তাই আজই একমাত্র সত্য । আর তাই দেখুন আজ আমি সফল । ”

এরকম আরও জীবন বদলে দেওয়ার মত গল্প পেতে Instructiv এর সাথেই থাকুন।
আজ এখানেই বিধায় নিচ্ছি। দেখা হবে এরকম আরো একটি পোস্টে। ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ।
খোদা হাফেজ।

আমাদের আরো সেরা দুটি motivational পোস্ট আছে। আপনি চাইলে পড়ে আসতে পারেন -

পরিশ্রমই পারে তোমাকে সফলতা দিতে...

নিজের বিশ্বাসের প্রতি গুরুত্ব...




Post a Comment

0 Comments